আনকথা #১২




সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই এখন পলাশ পার্বণ। ঝরা পাতা আর উদ্ধত লাল ফুলে ভেসে যাচ্ছে টাইমলাইন।

আমার বাগানটুকুও অল্প-বিস্তর রঙিন হয়ে আছে। ছবি তুললেও দেওয়া হয়ে ওঠেনি অনেকদিন।
হয়ে উঠছে না তো অনেক কিছুই। এই নব ফাল্গুনের দিনে কে কী চিনলো তো অনেক দূর, আমার নিজেকেই অচেনা লাগে এখন। নিজের ভালোলাগার কাজগুলো কতদিন করে ওঠা হয়নি ঠিকভাবে। ভালোলাগাও কেমন বদলে বদলে যায় বয়েসের বিভিন্ন বাঁকে। তেলেভাজা-নোনতা স্বাদের টান বদলে যায় মাঝরাতের সুইট ক্রেভিং এ। এই মনে হয় অমুক দিন ওখানে যাবো, সবাই আসবে, খুব গল্প করবো, আড্ডা দেবো। সময় এলে দেখা গেলো চুপ করে থেকেই সময় পার হয়ে গেলো। কথা কি নেই, কথা তো আছে। বুকের ভিতর থেকে কত কথা জমতে জমতে কোথায় গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে হদিশ তো জানি না। প্রতিদিন কত শব্দ জমছে, অথচ একটা লাইনও তো লেখা হয় না। কত কিছু পড়বো বলে জমিয়ে রেখেছি, জমেই চলেছে। এক সমুদ্র ক্লান্তি নিয়ে প্রাত্যহিকী চলছে, ঘুমের মধ্যে হাঁটছি কোনও এক বিশাল খোলা মাঠে। দিগন্তরেখায় ছায়ামাখা কিছু, কোথায় চলেছি জানি না। নয়তো বা অ্যালিসের মতো মাটির ভিতর পড়ছি তো পড়ছিই, সে কোন অতল জানি না, আমার পায়ে তো কিছু ঠেকছে না! নিশিডাকের মতো কিছু আবছা স্বর ডেকে যাচ্ছে, আমি যার উৎস খুঁজে চলেছি নদীর ধার বেয়ে।
মেস এ থাকার সময় একজন ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে সেই ঘড়ি ট্রাঙ্কে তালা দিয়ে রেখে বাড়ি চলে গেছিলো। ঘন শীতের ভোররাতে সেই শব্দে সবাই জেগে উঠে তোলপাড় করে খুঁজেছি সেই শব্দ। এখনও দিকভ্রষ্ট আমি যেন সেই কিছু শব্দ খুঁজে চলেছি, কে ডাকে। কেউ ডাকে না, কেউ ডাকেও নি। এই মন আর হরমোনের অত্যাচারে জর্জরিত আমি পালাতে চাই, সুযোগের অপেক্ষামাত্র।

Comments

Popular posts from this blog

অলিখিত #৪

অলিখিত #৩