উমরা ঘুমরা ঘন আয়ি...
তার এক কর্মহীন বিকালে আচমকাই জানলার পর্দা উড়ে যায়। সে ছাতে এসে দাঁড়ায়। সে খেয়ালও করেনি দক্ষিণপূর্বে কখন ঘন মেঘ জোট বেঁধেছে। যেন মদালসা হস্তিনীর দল, গা তাদের কালো পাথরের মতো চকচকে, আকাশগঙ্গায় স্নানে চলেছে। অন্যমনা সেই তার অবিন্যস্ত চুল, এলোমেলো করে যায় বাদলা বাতাস। সে ভাবে কখনো না দেখা বর্ষার কথা । কতদূর সে রামগিরি পর্বত, শিখরে শিখরে যার নবঘনশ্যাম জলদপুঞ্জ, পাহাড়ের ঢাল আলো করে ফুটে থাকা কূটজ ফুল, অলসগতি বন্যহরিণের ছায়াশীতল চোখ আর বিরহক্লান্তা যক্ষপ্রিয়ার অন্বেষণে সেই দূত-মেঘ। না জানি সে কেমন বরিষণ আসতো সে দেশে, সে কেমন ধারাজলে হেসে উঠতো গিরিমল্লিকা, বন থেকে বনান্তরে ছড়িয়ে পড়তো কেকারব, অসময়ে অন্ধকার হয়ে এলে একটি একটি করে বাতায়নে দীপ জ্বলে উঠতো, গৃহে গৃহে বেজে ওঠা সন্ধ্যাশঙ্খধ্বনিতে ঈষৎ স্তিমিত হতেন কি বজ্রধর?
তার ভাবনার মাঝে বৃষ্টি আসে, প্রথমে ঝিরিঝিরি, তারপর অতর্কিতেই অঝোরে নেমে আসে আকাশ ছেঁচা জল। সে ভিজতে থাকে। তার সাথে ভেজে তার ছোট্ট ছাতবাগানের টবে গন্ধরাজ, কামিনী আর জুঁইফুল। জলের আঘাতে নুয়ে যায় মুকুলিত হাস্নুহানার ডাল। সে দেখে ছাতের মেঝের চৌখুপি তে এক্কাদোক্কা খেলছে বৃষ্টিদানা। তার মনে হয় কতদিন দেখা হয়না প্রিয়বন্ধুদের মুখ, অকারণে হেসে ওঠা হয়না এই বৃষ্টিঝারির মতো। সজল বাতাসে তার শিরশিরানি লাগে, তার আচ্ছন্ন চেতনায় বেজে ওঠে কোন দূরাগত সুর,
তার ভাবনার মাঝে বৃষ্টি আসে, প্রথমে ঝিরিঝিরি, তারপর অতর্কিতেই অঝোরে নেমে আসে আকাশ ছেঁচা জল। সে ভিজতে থাকে। তার সাথে ভেজে তার ছোট্ট ছাতবাগানের টবে গন্ধরাজ, কামিনী আর জুঁইফুল। জলের আঘাতে নুয়ে যায় মুকুলিত হাস্নুহানার ডাল। সে দেখে ছাতের মেঝের চৌখুপি তে এক্কাদোক্কা খেলছে বৃষ্টিদানা। তার মনে হয় কতদিন দেখা হয়না প্রিয়বন্ধুদের মুখ, অকারণে হেসে ওঠা হয়না এই বৃষ্টিঝারির মতো। সজল বাতাসে তার শিরশিরানি লাগে, তার আচ্ছন্ন চেতনায় বেজে ওঠে কোন দূরাগত সুর,
শাওন ঝরিয়ো ঝারি আয়োরে
ইতাতে উতাতে চাহুঁ দিশা তে
বদরি গরজা বরষায়োরে।।
ইতাতে উতাতে চাহুঁ দিশা তে
বদরি গরজা বরষায়োরে।।
বান্ধিও আমবা পাই ঝুলা রে
আও সহেলিয়া মিলা গায়ো রে।।
আও সহেলিয়া মিলা গায়ো রে।।
শাওন ঝরিয়ো ঝারি আয়োরে....
তার কান্না পায়, বহুযুগের পথ পেরিয়ে আসা কান্না বৃষ্টিধারার সাথে মিশে ছড়িয়ে পরে তার গালে, চিবুকে। ভেজা নীলাভ সন্ধ্যায় পূর্বজন্মের ভাবনার মতো আবছায়া ঘিরে ধরে তাকে।
অলীক কোনো বর্ষাবিকেল, স্পর্শ থেকে দূরে
ভিতরপানে হয়না ভেজা, কেবলই মেঘ করে।
ভিতরপানে হয়না ভেজা, কেবলই মেঘ করে।

Comments
Post a Comment