কুর্চি
মাঝরাতের
আধোচাঁদ মেঘের আড়ালে খানিকটা হারালেই দক্ষিণদিক থেকে একটা বাতাস উঠলো। মোড়ের মাথায়
মুচকুন্দ চাঁপাফুলের পাপড়ি ঝরিয়ে, বড় লালবাড়িটার ছাদে জলের ট্যাঙ্কের নীচে ঘুঘুর
বাসায় ছোট্ট ছানাগুলোর সদ্য গজানো পালকে শিরশিরানি তুলে দিয়ে হাওয়াটা এসে পৌঁছালো
গলির মুখের ফ্ল্যাটবাড়িটার একদম উপরতলায়। আকাশীরঙের পর্দা উড়লো, উলোটপালোট
হলো ফ্রিজের মাথায় রাখা টেবল ক্যালেন্ডারের পাতাগুলো। সবই তো ঠিক আছে, এই তো কাচের
জাগে জল, টেবিলে মৌরি-মিছরির কৌটো, সেই পুরী থেকে আনা কাঠের কৌটোটাই তো! এই সোফা,
কুশন কভার, পর্দা এসব নতুন, বাঁকুড়ার ঘোড়া দুটোর একটা রয়েছে, অন্যটা নিশ্চয়ই
ভেঙেছে বাসাবদলের সময়। রান্নাঘরের স্টিলের ছোটো জারগুলো প্রায় সবই আছে, বদলের গেছে
লেবেলের লেখা। বদল, হ্যাঁ সে তো আরো কতো কিছুই! পর্দার ফাঁক দিয়ে রাস্তার আলো এসে
শোয়ার ঘরের মেঝেতে কীরকম ডোরাকাটা ছায়া এঁকেছে, সেই বালিশের পাশে চশমা রাখা...চুলে
এত সাদা ছোঁয়া লেগেছে এরইমধ্যে!!
ঘুম
ভেঙে ধড়মড় করে উঠে বসলো কৌশিক। সেই গন্ধটা, আবার! পরিষ্কার মনে আছে গন্ধটা নাকে
লাগতেই ঘুমটা ভাঙলো ওর। কিন্তু কই এখন তো আর নেই! বিছানা থেকে নেমে শোওয়ার ঘরের
লাগোয়া বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো সে, স্মোকিং ছেড়ে দিয়েছে পুপু হওয়ার পর থেকেই।
কিন্তু এখন একটা সিগারেটের বড্ড দরকার পড়ছে মনে হতে ঘরে ফিরতে গিয়েই চমকে গেলো
কৌশিক। বাঁ ধারে কোনাকুনি বড় রাস্তার দিকে ওটা কী গাছ! এখানে আসার পর এই প্রথম ফুল
দেখলো গাছটায়! সেই সাদা, ছোট ফুল আর এই তো সেই গন্ধ- কুর্চি!
মফস্বল
শহরগুলোর একটা নিজস্ব বাতাস থাকে। খুব ভোরে, নির্জন দুপুরে, সন্ধ্যা নামার ঠিক আগে
বা মাঝরাতে তার চরিত্র পালটে পালটে যায়। সে হাওয়ায় মিশে থাকে অকারণ পুলক বা
মনখারাপের পরাগরেণু। এরকমই এক বেপথু হাওয়ার দুপুরশেষে নিজেদের বাড়ির ছোট্ট একচিলতে
বাগানের গাছগুলোতে জল দিচ্ছিলো কেয়া। চৈত্রের মাঝামাঝি, বাগান আলো করে
ফুটে আছে নয়নতারা, ঝুমকো জবা, অপরাজিতা আর টগর। পাঁচিলের ধার ঘেঁষে দিদিশাশুড়ীর
লাগানো সবেদা গাছের গোড়া থেকে শুকনো পাতাগুলো সরিয়ে বাগানের এক কোণে রাখা ঝুড়িতে
ফেলে আসতে গিয়েই ওর চোখে পড়লো গাছটা। ছোট্ট গাছটার মাথা ভর্তি করে কুঁড়ি এসেছে-
কুর্চি! বড় সাধের গাছ ওর। সেই কতদূর কলেজ বাগান থেকে মালীবুড়োকে কত অনুনয় বিনয় করে
চেয়ে এনেছিলো গাছটা। বাগানে এমন জায়গায় লাগিয়েছে সে গাছ, যাতে বড় হলে ঠিক ওর
শোওয়ার ঘরের জানলার সামনেই হাসিমুখ দেখাতে পারে ফুলগুলো। একটু ঝুঁকে পড়ে
কুঁড়িগুলোকে ছুঁয়ে সোজা হতেই মাথাটায় আবার একচক্কর লাগলো যেন। একটু সামলে লঘুপায়ে
একটু উড়তে উড়তেই ঘরে এলো ও। চা বানিয়ে দুটো কাপে ঢেলে দোতলার বারান্দায় এসে দেখলো
শ্বশুরমশাই রেডিও টিউন করছেন।
-“দেরী
হয়ে গেলো ঘুমটা ভাঙতে, খেলা মনে হয় হাফটাইম হতে চললো, বুঝলে?”
-“ব্যাটারি
আছে তো বাবা? কালই তো সন্ধেবেলা নাটকের সময় ডিস্টার্ব করছিলো”
-“সেকী!
বললে না কেন সকালে, নিয়ে আসতাম”
-“মনে
ছিলো না বাবা, আমি যাবো এখন? অনিলদার দোকান থেকে এনে দেবো?”
-“থাক,
তোমাকে অত হাঁটাহাঁটি করতে হবে না এখন। তোমার শাশুড়ী নেই, নিজেকেই একটু বুদ্ধি করে
চলতে হবে কেয়া। বাবু এলে কথা বলে দেখো যদি তোমার মায়ের কাছে গিয়ে থাকতে চাও”
-“আমি
এখানেই থাকবো বাবা, নাহলে অনেক অসুবিধা হবে”
পুত্রবধু-শ্বশুরের
চা-আলাপের মাঝে ছোট্ট শহরটিতে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো। স্টেশন থেকে আসা ট্রেনের
শব্দে ঘড়ি মিলিয়ে কোনো বাড়িতে পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে বইখাতা খুলে বসলো তো কোনো হেঁশেলে
রুটির আটা মাখা শুরু হলো। সন্ধে দেওয়ার পরে রান্নাঘরের কাজ রান্নার মাসিকে বুঝিয়ে
দিয়ে কেয়া নিজের ঘরে এলো। শোকেসের উপরের পুরোনো বাটিকের শাড়ি কেটে বানানো ঢাকনা
সরিয়ে নীলচে খামটা হাতে নিয়ে ভিতরের কাগজটা বার করে পড়লো, বুকে চেপে বিছানায় শুয়ে
পড়লো- পাশের বাড়ীতে সদ্য আসা স্টিরিও থেকে ভেসে আসা গানে গলা তার অস্ফুট গলা
মিললো, “আমার স্বপ্ন যে সত্যি হলো আজ”...উফ, কখন যে ফিরবে মানুষটা, স্বপ্ন সত্যি
হওয়ার খবরটা দিলে সে কী করবে এই ভেবে লজ্জায় খুশিতে বালিশে মুখ গুঁজে দিলো সে।
অনেক
রাতে, খুশীর খবরে উচ্ছল মানুষটার হাতের বেড়ের মধ্যে মিশে যেতে যেতে কেয়া বললো,
“কুর্চি গাছটায় আজকেই কুঁড়ি এসেছে জানো। বলেছিলে ওর তলাটা বাঁধিয়ে দেবে, ভুলবে না
কিন্তু। আর মেয়ে হলে নাম রাখবো কুর্চি, মনে আছে তো?”
এই দুই আনন্দিত মনের অনুরাগের স্পর্শ নিয়ে চৈতালি
বাতাস আসে ঘর থেকে বাইরে, আনন্দে সেও একটু ঘুর্ণী হয়ে যায়, তার ছোঁয়ায় কাঁপন লাগে
কুর্চির ডালে প্রথম পাপড়ি মেলা আধফোঁটা কুঁড়িটায়, বুকে তার মধু ভরে আসে।
এর পরের ছয় মাস যেন পক্ষীরাজে সওয়ার হয়ে কাটে
কেয়ার। নতুন অতিথির সম্ভাবনা তার স্নিগ্ধ শ্রীতে আরও লাবণ্য যোগ করতে থাকে।
মাতৃস্থানীয়া প্রতিবেশিনীরা বলেন ঘরে লক্ষ্মী আসছেন, কেয়া দেখে যে আসছে তার হাসি
ফুটে আছে তার জানলার বাইরে। প্রথম বর্ষা বেশ কিছুটা দীর্ঘায়িত হওয়ায় গাছটা এখন বেশ
বড়ো। ফুলের আড়ালে পাতা ঢাকা পড়ে গেছে তার। রাত বাড়লে গন্ধে ওদের ঘর ম’ ম’ করে। কেয়ার
মা অনেক অনুরোধ, উপরোধ করেও মেয়েকে তাঁর কাছে নিয়ে রাখতে পারেন নি। নিজের শরীরের
পরিবর্তনের সাথে গাছটার কোনো এক অদ্ভুত সাযুজ্য খুঁজে পেয়ে কেয়া এই বাড়ি, এই গাছ
ছেড়ে কোথায়ও গিয়ে থাকতে রাজী নয়। কেয়ার ডাক্তার ওর স্বামীকে বলেছেন এই সময় মেয়েদের
শরীরের সাথে মনেরও নানা পরিবর্তন হয়, খুব বিপজ্জনক কিছু মনে না হলে ওকে ওর ইচ্ছা
মতো থাকতে দেওয়া যেতেই পারে।
কিন্তু অলক্ষ্যে যিনি থাকেন, তাঁর ইচ্ছার
কূল-কিনারা কোনোদিনই বোঝা যায় নি, তাই শেষ বর্ষার এক সন্ধ্যায় কুর্চিগাছের তলার
বাঁধানো বেদীতে পা পিছলে সংজ্ঞা হারায় কেয়া। ছায়াছবির ঘটনার মতো মা অথবা শিশুর দোটানা
কাটিয়ে অপারেশনের দশদিন পর বাড়ি ফেরে কেয়া। সারা দুপুর ওর নির্জন শোয়ার ঘরে কুর্চি
গাছের ছায়া পড়ে, ওর মনে হয় কেউ যেন পরম মমতায় ব্যথার জায়গায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
বিকাল হলে শ্বশুরমশাই খোঁজ করতে এসে ফাঁকা
ঘরের জানলা দিয়ে দেখতে পান সে বেদীতে শুয়ে ঘুমিয়ে আছে। কীভাবে যেন ওর বদ্ধমূল
ধারণা হয় ওর কোলে না আসা কুর্চিই গাছ আলো করে আসবে আবার খুব তাড়াতাড়ি।
স্নান-খাওয়া-বিশ্রাম-সংসার সব পড়ে থাকে অযত্নে, কুর্চি গাছ নিয়ে কেয়া বিভোর হয়ে
থাকে। প্রতিবেশীরা দেখেন কেয়া আপনমনে গাছের সাথে কথা বলছে, ডাল জড়িয়ে আদর করছে।
“এত সুন্দর মেয়েটা পাগল হয়ে গেলো” এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে তাঁরা এবং অন্যান্য
আত্মীয়স্বজনেরাও বিধান দেন, গাছটি কেটে ফেলাই ভালো। এক রবিবারে নিজের ঘরের জানলা
থেকে কেয়া দেখলো তার সাধের কুর্চিকে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ছে। সেই সন্ধ্যাতেই সে
প্রবল জ্বরে বেহুঁশ হলো, কুর্চি গাছের ফাঁকা জায়গাটা আর তাকে দেখতেই হলো না।
বিনা
নোটিশে হঠাৎ করেই ঘুমের মধ্যে বাবা যখন চলে গেলেন, মানসিকভাবে একদম
ছিন্নিবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিলো কৌশিক। সারাদিন বেশ কেটে যায় ডেলিপ্যাসেঞ্জারি, কাজের
ব্যস্ততায়, কিন্তু রাত হলে ফাঁকা বাড়ি ওকে যেন গিলতে আসে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে চমকে
ওঠে কৌশিক, সেই পরিচিত গন্ধ যেন জমাট হয়ে আছে বিছানার পাশে আলনার খালি তাকে,
শোকেসের পুরোনো ঢাকনায়, ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় এখনো আটকে থাকে মাঝারি গোল টিপে।
তার ঘুম হয় না, সে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে। সাধারণভাবে এরকম অবস্থায় বন্ধুরাই এগিয়েই
আসে, কৌশিকেরও তাই হলো। আশপাশের শহরতলীতে পুরোনো বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট ওঠা শুরু
হয়েছিলো বেশ কিছুদিন ধরেই। সেরকমই একটা ফ্ল্যাট কেনা হলো, ঠাকুরদার আমলের বাড়ি আর
একচিলতে বাগান বিক্রি করে। জিনিসপত্র নিয়ে চলে আসার দিন নিজেকে স্থির রাখতে আর
পারেনি কৌশিক। কান্নায় ভেঙে পড়া কৌশিককে সামলে নিয়ে এসেছিলো ইন্দ্রনীল, কলেজের
সময়কার বন্ধু তারা দুজন। মূলতঃ ইন্দ্রনীলের অভিভাবকত্বেই আবার নতুন করে সব শুরু
হলো কৌশিকের। শ্রাবণীর সাথে বিয়ে এবং ওদের মেয়ে পুপুর আসাটাও খুব তাড়াতাড়িই হয়েছে
নতুন বাড়িতে আসার পরেই।
দুপুরবেলাটা পুপুর কিছুতেই ঘুম আসেনা। মা প্রথমে
আদর করে, গল্প বলে, তারপর বকুনি দিয়ে জোর করে চেপে শুইয়ে রাখে। একটু পরেই পুপু
বোঝে মায়ের হাত আলগা হয়ে গেলো, মানে মা নিজেই ঘুমিয়ে পড়েছে। পুপু আস্তে করে উঠে
জানলায় দাঁড়ায়। নীচেই বড়রাস্তা, সারাদিন কত গাড়ী যাচ্ছে, মোটরসাইকেল- পুপু একমনে
দেখে। ওদের জানলার পাশেই একটা গাছ। তাতে কাকের বাসা আছে। ওদের জানলা থেকে এইটুকুন
টুকুন বাচ্চা দেখা যায়। মা বলেছে কাকের বাসায় বাচ্চা কোকিল থাকে। পুপুর একটা
কোকিলের ছানা চাই, কী সুন্দর ডাকে। মন দিয়ে এসব দেখতে দেখতে পুপু হঠাৎ যেন খিলখিল
হাসি শুনতে পায়। ঘাড় ঘুরিয়ে বিছানায় ঘুমন্ত মা কে ছাড়া আর কাউকে দেখে না ও। ওর ভয়
লাগে, চুপচাপ মায়ের পাশে এসে শুয়ে পড়ে পুপু। পরে মা কে বলাতে মা বলে দুপুরবেলা না
ঘুমালে ছেলেধরা ধরে নেয়, বড় বড় ঝুলি কাঁধে রাস্তা দিয়ে যায়, ওরাই হাসে অমন। আস্তে
আস্তে প্রতি দুপুরেই ওই হাসিটার সাথে বন্ধুত্ব হতে থাকে পুপুর। আর যেন ভয় লাগে না,
পুপুও হাসে গাছের দিকে তাকিয়ে। ছোট্ট দুটো হাত নাড়ায়, গাছটাও ডাল-পাতা নাড়িয়ে যেন
সাড়া দেয় ওর ডাকে। শুধু মা উঠে গেলেই সব চুপচাপ হয়ে যায়।
এক সপ্তাহের মধ্যে বার দুয়েক ওই রকম মাঝরাতে ঘুম
ভেঙে গেলো কৌশিকের। গাছটার দিকে চোখ পড়লেই অস্বস্তি লাগতে থাকে। শ্রাবণীকে বার বার
বলে ওদিকের জানলা বন্ধ রাখতে, সে কিছুতেই কথা শোনে না। ছুটির দিনে দুপুরে পুপুকে
ওই গাছের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে গেছে ওর। কষে ধমক লাগাতে
মা-মেয়ে দুজনেই অবাক, আকস্মিকতায় ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছে মেয়ে, মায়ের মুখে মেঘ জমেছে।
নাহ, এটা বাড়তে দেওয়া মুস্কিল। লোকাল কাউন্সিলরকে অনুরোধ করে এটার কিছু একটা
ব্যবস্থা করতেই হবে।
আজ দুপুরে খুব গরম। মা সব কাজ সেরে অনেকক্ষণ ধরে
স্নানে গেছে। একটু আগে ছাদ থেকে জামাকাপড় আনতে গেছিলো মা, পুপু দেখেছে দরজাটা ভালো
করে লাগেনি। হাল্কা পায়ে দরজার বাইরে আসে পুপু, যাহ দরজাটা যে বন্ধ হয়ে গেলো! মা
বকবে তো বেল বাজালে। একটু দাঁড়িয়ে কীসের যেন তাড়ায় পুপু চলে এলো ছাদে, ওই তো কোণের
দিকে গাছটা, অনেক সাদা সাদা ফুল হয়েছে। খুব মধু নিশ্চয়ই, সেইটা খেয়েই তো কোকিলের
ছানার গলা মিষ্টি হবে। ওকে দেখে গাছটা হাতছানি দিয়ে ডাকলো যেন। রেলিং এর কাছে গিয়ে
হাত বাড়িয়ে ধরতে পারলো না পুপু। নাহ, এটার উপরে উঠতে হবে। একটু দূরে জড়ো করে রাখা
দুটো ইঁট বহু কষ্টে টেনে আনলো পুপু, এই তো দিব্যি সিঁড়ি, এবার আস্তে আস্তে, এই তো
উঠে পড়েছে পুপু। গাছটা ডাকছে, “এসো, পুপু, এসো” আর ওই লুকিয়ে থাকা খিলখিল হাসি,
ওটা যে গাছটাই হাসে সেটা এতদিনে বুঝে গেছে পুপু। আজ ওকে দেখবেই, হাত বাড়িয়ে শরীরটা
এগিয়ে দেয় পুপু, “আসছিই...”।
Comments
Post a Comment