আন-কথা #৪

এমন বৃষ্টিদিনে খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করে জানো। সেই আমাদের যৌথকল্পনার দিনগুলো, একটা সময় প্রবল উৎসাহে যাদের আমরা গড়তাম, সাজাতাম, অজান্তে হয়তো যাপনও করে ফেলতাম, সেই দিনগুলোকে সত্যি ভাবতে ইচ্ছে করে। বাইরের আকাশ যত ভার হয়ে আসে, মনের মধ্যে ততোটাই আলো ফুটিয়ে তুলতে ইচ্ছে করে। একটানা চলতে থাকা মনখারাপকে একটানে সরিয়ে ফেলে, মনে হয় খুব একচোট ভিজে আসি। ঠিক সেই সময়, খুব ভালোবাসার ইচ্ছে হয়। কিন্তু হয়ে ওঠে না তো কিছুই, ওই ইচ্ছেটুকু ছাড়া আর কীই বা হয়!

মনে হয় আরও কতদিন আগে কোন স্বপ্নের ওপারে এমন বৃষ্টি নামতো অবেলায়...বৃষ্টির অবশ্য বেলা অবেলা কিছু হয় না, অসময়ে অন্ধকার হয়ে আসতো জনপদগুলি, ত্রস্ত টিয়ার সবুজ ডানার ঝাঁকে ভর দিয়ে নদীর ভেজা বাতাস ছুঁয়ে যেতো কদমের ডাল, সুবর্ণরেণু তার ছড়িয়ে পড়তো অপসৃয়মান রোদের কণায় মিশে। আমারই মতো মনখারাপ করে আসতো হয়তো কার, কী করতো সে তখন? আজানুকেশ ভিজিয়ে নিতো আকাশছেঁচা জলে? মনখারাপ ধুয়ে মুছে কাগজের নৌকা হয়ে ভেসে যেতো জলকল্লোলে?

আমি দেখতে থাকি জানলার গ্রিলে জলফোঁটাদের সারি, সদ্যফোঁটা অর্কিডের পাপড়িতে মুক্তোদানার মত জল টলমল করে, আঙুল ছুঁইয়ে তাকে মুক্ত করে দিই, চোখে-মুখে ভিজে ছাঁট লাগে, আমার ভালো লাগে, আমার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। মনে হয় সামনের ওই জলের পর্দাটা সরার যা দেরী, তার ওপাশেই হয়তো সেই আমাদের দিনগুলো, নয়নপথগামী হওয়ার অপেক্ষায় ওরাও বসে আছে সেই কবে থেকে...





   

Comments

Popular posts from this blog

আনকথা #১২

অলিখিত #৪

অলিখিত #৩