Posts

Showing posts from June, 2017

নতুন বর্ষায়, ফিরে দেখা বসন্ত (পুরোনো ব্লগ থেকে)

সম্বচ্ছরের সব চাইতে মনকেমনের সময় এখন... বড় রঙ, বড্ড রঙিন চারদিক.... কলকাতা শহরে এত শিমুল গাছ আছে ফুল না ফুটলে কে জানতো? একেকটা গাছে কি অদ্ভুত রঙের কচিপাতা, কোনোটা স্বপ্নসবুজ ,পেঁ...

আমার মনখারাপ ও বেক-ম্যানিয়া #১

Image
কী জানি কেন কিছু লিখতে গেলেই মনখারাপের কথা চলে আসে। দূরে ঠেলে রাখতে চাই, কিন্তু না, নাছোড়বান্দা প্রেমিকের মতো ঠিক সেই কাছ ঘেঁষে আসে। চুলে বিলি কাটে, আলগোছে ছুঁয়ে থাকে। ভাবখানা এমন যেন , কোথায় যাবে, পালাবার পথ তো নেই, সেকথা কি জানো না?! নাহ, আজকাল মনখারাপের ফিরিস্তি লিখতে বড্ড বিরক্ত লাগে। এই মনখারাপ, এই ক্লান্তি আমার একার কিছু নয়, অনেককেই দেখি এই একই কথা বলতে। আগে এসব অনেক লিখেছি, আর নয়। আমি আমার বেকিং ওয়ার্ডোব খুলে বসি। একটা একটা করে মিক্সিং বোল নামাই, বেছে বেছে মেজারিং চামচ আনি। ডাইনিং টেবিলে ঢাকনা পাতি। ময়দার কৌটো, গুঁড়ো চিনি, ভ্যানিলা এসেন্সের বোতল বের করে রাখি, ফ্রিজ থেকে নামাই আমার ঠান্ডা মনের মতো জমাট মাখন।কাপে মেপে নিয়ে ময়দা চালতে থাকি, বাটির মধ্যে ছোট্ট বরফের পাহাড়ের মত ময়দা জমে, কিছু উড়োঝুরো এদিক ওদিক উড়ে যায়, আমার এলোমেলো ভাবনার মতই। আমি যত্ন করে চিনি ঢালি, একদম মাপে মাপে ভ্যানিলা। এরপর মেশাই নিখুঁত টুকরো করে কাটা মাখনের টুকরো। ঠিক যতটা দরকার, ততটাই। আতিশয্য বা অভাব কোনোটাই চলে না এখানে। যেন ঠিক আমার ইউটোপিয়ার জীবন, ঠিক যেমনটা চাই, যতটুকু চাই, যেভাবে চাই, সেভাবেই। আমার...

আনন্দম

ফর্দ ধরে ধরে জিনিস মিলিয়ে নিচ্ছিলেন সুনয়না দেবী। রান্নাবান্নার সময় সঠিক সরঞ্জাম না পেলে বিরক্ত লাগে ওনার। কর্তা, ছেলে-মেয়ে, বৌমারা সবাই বলে পিটপিটানি, কিন্তু কী আর করা, আজন্মকালের অভ্যেস আর যায় কখনো! নন্দন রোডের মিত্রবাড়িতে আজ বড় আনন্দের দিন।  বহুদিন প্রবাসে নিজের ছেলের কাছে কাটিয়ে আজ বাড়ি ফিরেছেন বাড়ির সকলের প্রিয়, সুনয়নার সেজো বৌমা, করবী মিত্র।  ভিতরের ঘরে বড়,ছোট জা, দুই ননদের সাথে গল্পে বসেছেন করবী। -" সত্যি বৌদি, আমাদের কথা তো ভুলেই ছিলে।" "কী বললে বিশ্বাস করবে, তোমাদের কথা একটা পলের জন্যও ভুলিনি। তাড়াহুড়ো করে এলাম তো সেই জন্যই" "এই নাকি তাড়াহুড়োর নমুনা। আসবে আসবে করে কতবার আটকে গেলে বলতো" "মায়ের চেহারা একদম এক আছে দেখছি। কী ভালো যে লাগছে, কী বলবো" "শান্তি, বৌমা, শান্তি, বুঝলে কিনা। মনে শান্তি থাকলে আর কী চাই" রান্নাঘরের দিকে যেতে যেতে হেসে বলে গেলেন সুনয়না। "থাক অনেক হয়েছে", ননদ চিত্রাকে একটু ধমকের সুরে বললেন করবীর বড় জা সুতপা, "ওকে ছাড় তোরা এখন, ঠাকুরপো তিনবার অকারণে এখান দিয়ে ঘুরে গেল, তোদের কোনো ...

হারিয়ে যেতে যেতে ( পুরোনো ব্লগ থেকে)

খবরের কাগজে নিরুদ্দেশ কলাম পড়তে আমার কেন জানি বেশ লাগে। ভাবি, সত্যি কতো মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। কোথায় যাচ্ছে এরা, কী হচ্ছে এদের, এদের মধ্যে কেউ কি ইচ্ছে করেই নিখোঁজ নাকি ঘটনাস্রোতে হারিয়ে গেছে?! ভালো লাগে তাদের ফিরে পেতে চেয়ে প্রিয়জনদের আর্তি। এটাও ভাবি যে এতো মানুষ তাকে ভালোবাসে জানলে হয়তো সে আর নিরুদ্দেশ হতোই না। “অমুকের খোঁজ পেলে অমুক ঠিকানায়” জানানোর কথা লেখা থাকে সেই সব বিজ্ঞাপনে। কেউ যখন নিজের অভ্যস্ত ঘেরাটোপের নিভৃততাকে পিছনে ফেলে বেরিয়ে আসে, তখন কি সেটা আর তার “বাড়ি” থাকে? নিছকই “ঠিকানা” হয়ে দাঁড়ায় না কি? কিছু অক্ষর আর সংখ্যা দিয়ে তৈরি একটা ঠিকানা তখনই কারোর নিজের হয়, যখন সেখানে মেশানো থাকে উষ্ণতা আর মায়া মাখা কোনো আশ্রয়। যদিও, “তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় না তো...”, তবুও যারা ইচ্ছে করেই নিরুদ্দেশ হয়ে যায়, তাদের কি খুঁজে পাওয়া সত্যি সম্ভব? রক্তমাংসের শরীরে থাকা মানেই তো শুধু থাকা নয়, সবার মাঝে থেকেও নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া যায় মনে মনে আর “মনের হদিশ কেই বা জানে...” 

ইচ্ছে করে

প্রবল কোন অসম্ভবের সঙ্গী হতে ইচ্ছে করে। আয়নাপাড়ের ক্লান্ত ছবি, বন্ধ তালার ভ্রষ্ট চাবি হিসেবনিকেশ লাভ খতিয়ান থাকুক পড়ে- গহন কোনো ঘুমের মাঝে তলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। আমার ভীষণ ইচ্ছে করে... থাকবে সাথে রুকস্যাক আর লেখার খাতা। হারাবে পথ পাহাড়পথে, একলা হব নিজের সাথে শুনব হাওয়ার কাঁপনলাগা স্তব্ধগাথা। এই জীবনে আর কত বা পাওয়ার কথা। আমার আর কত বা পাওয়ার কথা.. সেদিন যদি আমায় ভেবে একটু ভেজে চোখের কোণা, পাইনবনের বাতাস আমায় পৌঁছে দেবে তার নিশানা। মনকেমনের ঘুমকুয়াশায় হাতছানি দেয় শহর আমার, ফেরার হওয়া পথগুলি সব বায়না করে তোমায় ছোঁয়ার- হয়তো ফিরে আসতে পারি , নির্ঝরিণী খামখেয়ালের মনকে কি আর সত্যি চিনি ? এই মনকে কি আর সত্যি চিনি ?!